ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং এর আশপাশে সম্প্রতি গোলাগুলির স্থানে একটি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ)। বর্তমানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি রাশিয়ার দখলে রয়েছে। জাতিসংঘের এই আহ্বানকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। খবর বিবিসি এবং আলজাজিরা।

গত সপ্তাহে আইইএ’র মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসির নেতৃত্ব একটি প্রতিনিধি দল ওই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরিদর্শন করে। এরপর গতকাল মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির অনুসন্ধানের বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে অবহিত করেন তিনি। তার দেওয়া ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় ‘বর্তমান পরিস্থিতি অস্থিতিশীল।’

ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দখল করায় পারমাণবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি করেছে। কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধে উভয় পক্ষই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির আশপাশে গোলাগুলির জন্য দায়ী।

ওই প্রতিবেদনে আইইএ বলেছে, ‘সামরিক কর্মকাণ্ডের ফলে পারমাণবিক দুর্ঘটনায় কোনো প্রকার ক্ষয়ক্ষতি রোধে অন্তর্র্বতীকালীন পদক্ষেপ নেওয়ার জরুরি প্রয়োজন রয়েছে। দ্রুত পারমাণবিক সুরক্ষা এবং নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তা অর্জন করা যেতে পারে।’

জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থাটির প্রতিবেদনে করা সুপারিশে বলা হয়, ‘ওই পারমিাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং এর আশেপাশে গোলাবর্ষণ অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। যাতে বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্থাপনার আর কোনো প্রকারের ক্ষতি এড়ানো যায়।’

এদিকে জাতিসংঘের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি নিরাপত্তা অঞ্চলকে সমর্থন করবেন। যদি এটি পারমাণবিক প্ল্যান্টের অঞ্চলকে নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্যে করা হয়ে থাকে।

তিনি আরও বলেন, ‘ওই প্রতিবেদনে প্ল্যান্টের ভূখণ্ডে সামরিক সরঞ্জামসহ রুশ বাহিনীর সামরিক উপস্থিতির উলে­খ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্ল্যান্টের কর্মীদের ওপর চাপ প্রয়োগের কথাও বলা হয়েছে যা মূলত রাশিয়ার সামরিক দখলের স্পষ্ট স্বীকৃতি ।’

গত সপ্তাহে আইএইএ’র ১৪ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলটি ওই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরিদর্শনকালেও তার চারপাশে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। যদিও দলটির অধিকাংশ সদস্যই দুই দিন পর প্ল্যান্ট ছেড়ে চলে গেছেন। তবে দু’জন কর্মকর্তা সেখানে স্থায়ীভাবে থাকবেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।